চা–শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণসহায়তা চেয়েছেন বাগানমালিকেরা। আর চা ব্যবসায়ীরা রপ্তানিতে প্রণোদনা চান।
আজ রোববার ‘বাংলাদেশের চা–শিল্প: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে উদ্যোক্তারা এসব দাবি জানান। প্রথম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ চা বোর্ড এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম।
চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে সংস্কার কর্মসূচি নেওয়ার জন্য যেমন স্বল্প সুদে ঋণ দরকার, তেমনি রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে প্রণোদনা দরকার বলে অভিমত দেন সেমিনারে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তারা।
সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চায়ের ভোগ আগামী দিনে আরও বাড়বে। এ জন্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। চা খাতে উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠন, প্রণোদনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে চা খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, দেশীয় উৎপাদন দিয়ে যদি ধারাবাহিকভাবে চাহিদা মেটানো যায়, তাহলেও বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয়। শ্রমিকদের জীবনমান যত উন্নত হবে, উৎপাদনশীলতাও তত বাড়বে।
মূল প্রবন্ধে মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, চায়ের বৈশ্বিক বাজার ৬ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। বৈশ্বিক বাজারে বছরে ১৯০ কোটি কেজি চা রপ্তানি হয়, যেখানে আমাদের হিস্যা খুবই সামান্য। চায়ের বিশাল বাজার ধরতে দামি চা ও বৈচিত্র্যময় চা রপ্তানিতে জোর দিতে হবে। চা চাষে যান্ত্রিকীকরণ করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, চা চাষের প্রসার ও চা–শিল্পের উন্নয়নে চা বোর্ডের নানা প্রকল্প চলমান আছে।
ফিনলে টি কোম্পানির পরিচালক এ কিউ আই চৌধুরী বলেন, চায়ের ভোগ বাড়ছে। আবার জমির স্বল্পতা আছে। এ জন্য যান্ত্রিকীকরণ এবং খরচ কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে নজর রেখে বাগানে সেচব্যবস্থা আধুনিক করতে হবে।
কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শোয়েব আহমেদ বলেন, রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিলে উৎসাহিত হবেন উদ্যোক্তারা।
চা–বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম চা খাতের উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠন করে সেখান থেকে স্বল্প সুদে বাগানমালিকদের ঋণ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চা খাতে ঋণ পরিশোধের হার সাড়ে ৯৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ চা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, বড় বড় কোম্পানির ব্র্যান্ড নকল করে বাজারে চা বিপণন হচ্ছে। এটা রোধ করতে নজরদারি বাড়ানো দরকার।
বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক উত্তরাঞ্চলে ভরা মৌসুমে ক্ষুদ্রায়তন চাষিরা যাতে চায়ের সবুজ পাতার দাম পায়, তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
চা–বিজ্ঞানী মাইনউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে চা বোর্ডের সদস্য নাজনীন কাউসার চৌধুরী ও অংশীদারেরা উপস্থিত ছিলেন।